হাড়ের জোড়া বা অস্থিসন্ধির সমস্যা নারীদেরই বেশি। বয়স না বাড়তেই বেশির ভাগ নারী কোমরব্যথা, হাঁটুব্যথা, কবজিব্যথাসহ নানা রকম ব্যথায় আক্রান্ত হন। গবেষকেরা বলছেন, অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা সন্ধিক্ষয় রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৬০ শতাংশই নারী।
এ ছাড়া হাড় জোড়ার বিভিন্ন রোগ যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস, স্কে¬রোডারমা ইত্যাদি মেয়েদেরই বেশি হয়। মেনোপজ-পরবর্তী নারীদের হয় অস্টিওপোরোসিস, হাড়ের ঘনত্ব যায় কমে। আর এ কারণে হাড় ভাঙার ঝুঁকি নারীদেরই বেশি।
মেয়েদের এই অস্থিসন্ধির সমস্যা বেশি হওয়ার কিছু কারণ রোগগুলোর নিজস্ব ধরন। যেমন লুপাস পুরুষদের তুলনায় ছয় গুণ বেশি হয় নারীদের, এটাই এ রোগের ধরন। আবার কিছু কারণ পরিবেশগত। যেমন নারীরা মধ্যবয়স থেকেই ওজন বৃদ্ধির সমস্যায় পড়েন, দেহের স্বাভাবিক ফিটনেস বজায় রাখতে ব্যর্থ হন। এর বিরূপ প্রভাব পড়ে অস্থিসন্ধির ওপর। ব্যায়াম ও খেলাধুলাতেও মেয়েরা পিছিয়ে।
এ ছাড়া সারা দুনিয়ায় মেয়েরা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-র অভাবে ভুগছেন, যে দুটো জিনিস হাড়ের সুস্থতায় খুব জরুরি। অস্থিসন্ধি সুস্থ রাখতে তাই অল্প বয়স থেকেই নারীরা সচেতন হবেন। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা ও ব্যায়ামের মাধ্যমে অস্থিসন্ধির ফিটনেস বাড়ান। এমন সব কাজ করুন, যা অস্থিসন্ধি সচল রাখে, যেমন সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি।
হাড়ের ঘনত্ব তৈরি হয়ে যায় বয়স ২০ হওয়ার একটু আগে-পরেই। তাই অল্প বয়স থেকেই যথেষ্ট ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যেমন দুধ, দই, ছোট মাছ, সবুজ পাতাওলা শাক ইত্যাদি খাবেন। ভিটামিন ডি আছে সূর্যালোকে। তাই বাইরে মেয়েদের নিয়মিত খেলাধুলা বা হাঁটাহাঁটি করা উচিত। গর্ভাবস্থা ও দুধ খাওয়ানোর সময় বাড়তি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি বড়ি সেবন করা উচিত।
বয়স বাড়া ও মা হওয়ার পরও নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। বাড়তি মেদ জমতে দেবেন না। দৈনন্দিন কাজ করার সময় সচেতন থাকুন, যেন সন্ধির ওপর বেশি চাপ না পড়ে। যেমন ভারী কিছু ওঠানোর সময়, নিচু হয়ে রান্নাঘরে কাজ করার সময় সঠিক দেহভঙ্গি ব্যবহার করুন।