মলদ্বার ফিস্টুলার কারণগুলি জানেন কি ? না জানলে জেনেনিন বিস্তারিত

লক্ষণগুলো কী কী

১. ঘন ঘন মলদ্বারে ফোড়া হওয়া, মলদ্বারের চারপাশে ব্যথা এবং ফোলা ভাব, মলদ্বারের চারপাশে একটি মুখ থেকে রক্তাক্ত বা দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ নিঃসরণ। এ ক্ষেত্রে ফিস্টুলা নিষ্কাশনের পর ব্যথা কমে যেতে পারে।

২. মলদ্বারের চারপাশের ত্বকে জ্বালা।

৩. মলত্যাগের সঙ্গে ব্যথা।

৪. রক্তপাত।

৫. জ্বর।

কীভাবে মলদ্বার ফিস্টুলা নির্ণয় করা হয়

একজন চিকিৎসক সাধারণত মলদ্বারের চারপাশের এলাকা পরীক্ষা করে মলদ্বার ফিস্টুলা নির্ণয় করতে পারেন। তিনি সেখানকার ত্বকে একটি মুখ ও নালির (ফিস্টুলা ট্র্যাক্ট) সন্ধান করবেন। তারপর দেখতে হবে, ট্র্যাক্ট বা সুড়ঙ্গটি কতটা গভীর। এটি কোন দিকে যাচ্ছে, তা নির্ধারণ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে বাইরের মুখ থেকে পুঁজ বা রস নিষ্কাশিত হয়।

কিছু ফিস্টুলা ত্বকের পৃষ্ঠে দৃশ্যমান না–ও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসককে অতিরিক্ত পরীক্ষা করতে হতে পারে। যেমন অ্যানোস্কপি পরীক্ষা হলো একটি পদ্ধতি, যেখানে মলদ্বার এবং মলদ্বারের ভেতরে দেখতে একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

ফিস্টুলা ট্র্যাক্ট আরও ভালোভাবে দেখার জন্য চিকিৎসক মলদ্বারের আলট্রাসাউন্ড বা এমআরআই করতে পারেন। কখনো কখনো ফিস্টুলা নির্ণয়ের জন্য অপারেটিং রুমে নিয়ে অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে পরীক্ষা করতে হয়। যদি ফিস্টুলা পাওয়া যায়, তাহলে আরও পরীক্ষা করতে হবে; কারণ, এটি অন্ত্রের একটি প্রদাহজনিত রোগ ক্রোনস রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। আবার মলদ্বারের টিবি থেকেও হতে পারে। রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, কোলনোস্কপি দরকার হতে পারে।

মলদ্বার ফিস্টুলার চিকিৎসা কী

অ্যানাল ফিস্টুলা নিরাময়ের জন্য প্রায় সব সময়ই সার্জারি প্রয়োজন। অস্ত্রোপচারটি কোলন এবং রেকটাল সার্জন করে থাকেন। অস্ত্রোপচারের লক্ষ্য হলো অ্যানাল স্ফিংকটার পেশিগুলোকে রক্ষা করে ফিস্টুলা থেকে মুক্তি, যাতে মলদ্বার পায়খানা ধরে রাখতে পারে।

যে ফিস্টুলাগুলোতে সামান্য স্ফিংকটার পেশি জড়িত থাকে না, তাদের ফিস্টুলোটমি অপারেশন করা হয়।

আরও জটিল ফিস্টুলার ক্ষেত্রে, সেটন নামে একটি বিশেষ ড্রেন স্থাপন করতে হতে পারে, যা কমপক্ষে ছয় সপ্তাহের জন্য থাকে। একটি সেটন স্থাপন করার পর একটি দ্বিতীয় অপারেশন প্রায় সব সময় করা হয়। যেমন একটি ফিস্টুলোটমি বা একটি অ্যাডভান্সমেন্ট ফ্ল্যাপ বা একটি ফিস্টুলেকটমি উইথ প্রাইমারি রিপেয়ার পদ্ধতি।

ক্রোনস ডিজিজ ফিস্টুলার একটি নতুন চিকিৎসা হলো ফিস্টুলায় স্টেম সেল ইনজেকশন করা। কলোরেকটাল সার্জন অস্ত্রোপচারের আগে সব বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবেন।

ফিস্টুলা সার্জারির পর রোগী একই দিনে বাড়ি চলে যেতে পারে। যেসব রোগীর খুব বড় বা গভীর ফিস্টুলা টানেল আছে, তাদের অস্ত্রোপচারের পর এক দিনের জন্য হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। কিছু ফিস্টুলা থেকে মুক্তি পেতে বেশ কয়েক ধাপে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।

ফলোআপ চিকিৎসা

বেশির ভাগ ফিস্টুলা অস্ত্রোপচারে ভালো হয়। অস্ত্রোপচারের পর হিপ বাথ বা সিটজ বাথ নিতে হয় এবং এক সপ্তাহের জন্য মল সফটনার বা জোলাপ গ্রহণ করতে হয়।

যদি ফোড়া ও ফিস্টুলা সঠিকভাবে চিকিত্সা করা হয়, তবে তা সম্পূর্ণ নিরাময় হয় এবং বারবার হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy