বাড়িতে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার এই তথ্যগুলো জানা আছে? না জানলে অবশ্যই জেনেনিন

হোম প্রেগনেন্সি টেস্ট হলো একটি চটজলদি পদ্ধতি, যাতে একজন নারী বুঝতে পারেন তিনি মা হতে চলেছেন কী না। এসব প্রেগনেন্সি কিট পাওয়া যায় অনেক ফার্মেসিতেই। একজন নারীর মাসিক দেরী হলে তার মূত্র পরীক্ষা করার মাধ্যমে এই কিট বলে দিতে পারে তিনি গর্ভবতী কী না।

তবে এসব কিট যদি পজিটিভ রেজাল্ট দেয়, তার পরেও ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া দরকার এবং এরপর গর্ভকালীন সেবা নেওয়া শুরু করতে হবে। ধূমপান এবং বিভিন্ন মাদক গ্রহণ বন্ধের উপদেশ দেওয়া হয় এ সময়ে।

শুধু তাই নয়, অনেক সময়ে এসব কিটের মাধ্যমে গর্ভধারণের ব্যাপারটা ধরা পড়লে নারী অ্যাবরশনের সিদ্ধান্তও নিতে পারেন ডাক্তারের সাথে কথা বলে।

অতীতে শুধুমাত্র ডাক্তার এবং নার্সদের সাহায্য নিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করা যেত। অনেক বেশী জটিল এসব পরীক্ষার ফলাফল পেতেও সময় বেশী লাগত। একজন নারীর মুত্রের নমুনা নেওয়া হতো, সেটা একটি খরগোশ, ব্যাঙ বা ইঁদুরের শরীরে প্রবেশ করান হত এবং এরপর সেই প্রাণীর প্রজনতন্ত্র থেকে হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রফিন (hCG) হরমোনের মাত্রা দেখা হত। এই হরমোন শুধুমাত্র গর্ভবতী নারীতে থাকে।

১৯৭০ সালের দিকে প্রথম হোম প্রেগনেন্সি টেস্ট কিটগুলোর প্রচলন হয়। এতে মুত্রের নমুনা দিতে হত এবং দুই ঘন্টা পর ফলাফল পাওয়া যেত। বর্তমানে আরো বেশ সহজলভ্য হয়ে পড়েছে এসব টেস্ট কিট। সাধারণত মূত্রে থাকা hCG হরমোনের মাত্রা পরিমাপ করে এরা। জরায়ুতে নিষিক্ত ডিম্ব অবস্থান নেবার পর পরই প্লাসেন্টা বা অমরা থেকে এই হরমোন উৎপাদন শুরু হয়।

কখন টেস্ট করবেন?

পিরিয়ড বা মাসিক বন্ধের পর পরই অনেকে টেস্ট করেন। কিন্তু পিরিয়ড মিস করার এক সপ্তাহ পর এই টেস্ট করলে পরিষ্কার ফলাফল পেতে পারেন।

কী করে ব্যবহার করবেন?

সাধারণত একটি কাপে মুত্রের নমুনা নিয়ে তাতে টেস্ট স্ট্রিপ ডোবাতে হয় অথবা একটি ড্রপারের সাহায্যে স্ট্রিপের ওপর এই নমুনা দিতে হয়। অথবা বাথরুমে কাজ সারার সময়েও এই স্ট্রিপ ধরে রাখতে পারেন। কয়েক মিনিট পরেই এর ফলাফল পাওয়া যায়। কিছু কিছু কোম্পানি বলে তাদের এই টেস্ট থেকে ৯৯ শতাংশ সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে। কিন্তু আসলেই কি সঠিক ফল পাওয়া যায়?

ফলাফল সঠিক কিনা কী করে বুঝবেন?

একেক টেস্ট কিটে একেক উপায় ফলাফল দেওয়া হতে পারে। হয়তো যোগ বা বিয়োগ চিহ্ন দেওয়া হতে পারে, একটি বা দুইটি লাইন আসতে পারে, রং পাল্টাতে পারে অথবা লেখা উঠতে পারে “প্রেগনেন্ট’ বা ‘নট প্রেগনেন্ট”।

অনেক সময়ে দেখা যায় পিরিয়ড মিস করার পর পরই টেস্ট করার ফলে শরীরে hCG এর মাত্রা এতই কম যে তা টেস্টে ধরা পড়েনি। ফলে টেস্ট নেগেটিভ দেখাতে পারে যদিও আসলে তিনি গর্ভবতী। কিছু কিছু ওষুধও এই টেস্টের ভুল রেজাল্টের কারণ হতে পারে। তবে সাধারণ ওষুধ যেমন বার্থ কনট্রোল পিল, পেইনকিলার বা অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে ফলাফলে তারতম্য আসে না।

ডাক্তারের কাছে গিয়ে আবারো মুত্রের নমুনার মাধ্যমে টেস্ট করা হতে পারে। যদি বেশিদিন ধরে তিনি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তাহলে আলট্রাসাউন্ড স্ক্যানও করা হতে পারে। ডাক্তারের কাছে করা টেস্ট সাধারণত বাসায় করা টেস্টের চাইতে বেশী নিখুঁত ফলাফল দেয়।

বাড়িতে প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কিছু টিপস

১) প্রেগনেন্সি কিটের প্যাকেজে থাকা নির্দেশনা ভালো করে পড়ুন এবং সঠিকভাবে অনুসরণ করুন।

২) সকাল বেলায় প্রথমবার মূত্রত্যাগের সময়ে এই টেস্ট করুন।

৩) পুনরায় টেস্ট করা দরকার হতে পারে। আপনি যদি মনে করেন আপনি গর্ভবতী কিন্তু টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে কয়েক দিন বা সপ্তাহখানেক পর আবার টেস্ট করুন।

৪) পিরিয়ড মিস করার পর পরই যদি টেস্ট করেন তাহলে ভুল রেজাল্ট পাবার সম্ভাবনা থাকে কারণ শরীর তখনো যথেষ্ট hCG উৎপাদন করে ওঠে না।

Related Posts

© 2024 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy